[ করোনা ভাইরাস ] পৃথিবীজুড়ে রকমারি ফিতনার বজ্রধ্বনি। মাসিহে দাজ্জালের অভিষেকের মাহেন্দ্রক্ষণ। হযরত আল মাহদির বরকতময় আত্মপ্রকাশের একেবারে পূর্বমুহূর্ত। আলামত সাক্ষ্যদান করে ইতোমধ্যে হযরত মাহহদি মক্কায় আত্মগোপনে রয়েছেন, আল্লাহ ভালো জানেন।
ধরে নিন-
বৈশ্বিক আমদানি-রফতানি টোটালি বন্ধ। উপার্জন মাধ্যম বন্ধ। কামাই-রোজগার নেই। সবাই আপনগৃহে বিনাপরাধে গৃহবন্দি। স্টকহোম যা ছিলো ক্রমাগত ফুরিয়ে আসছে। ইয়া নাফসি! ইয়া নাফসি করে করে ঘরের স্টক খাবার শেষ! প্রতিবেশীর সেইম হালত। আত্মীয়-স্বজনের ঘর থেকেও খিধের ক্ষীণ আওয়াজ কানে আসছে। কারও ঘরে দানাপানির ঝনঝনানি নেই!
একদিন, দুদিন, তিনদিন-নাহ খাবার তো কোথাও মিলছে না! অনাহারক্লিষ্ট সবাই। বাচ্চার মুখে খাবার নেই। চোখদুটি খিধের তাড়নায় বেরিয়ে যাবার দশা! কী নির্মম চাহনি! প্রিয়তমা স্ত্রীর মুখ মলিন। মা-বাবা, ছোটছোট ভাই-বোনের অবস্থা আরও করুণ!
ঠিক এই মুহূর্তে বাহির থেকে এক মিষ্টি আওয়াজ এভাবে এলো- ওখানে ‘ত্রাণ’ বিতরণ করা হচ্ছে। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। দ্রুত যাও সেখানে, যার যা প্রয়োজন নিয়ে আসো! টাটকা, গোস্ত, মাছ, চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব খাবার দেয়া হচ্ছে। সাথে ব্যাগভর্তি ফলমূল। কাপড়চোপড়ও রয়েছে।
আওয়াজ শোনার সাথেসাথে মহল্লায় যেন প্রাণ ফিরে এলো। সবাই স্পন্দিত হলো। হুমড়িখেয়ে পড়লো ত্রাণবিতরণ কেন্দ্র! প্রতিবেশীর দেখাদেখিতে, পিতা-মাতার নির্দেশে, স্ত্রী-সন্তানের করুণ চাহনি আর তাদের আবদারে আপনি ঘর থেকে বেরোলেন! গিয়ে সিরিয়ালে দাঁড়ালেন। একে একে অনাহারী লোকেরা খুশিমনে সামনে রাখা রেজিস্টারি খাতায় স্বাক্ষর করে দু’হাত ভরে ত্রাণ নিয়ে ঘরে যাচ্ছে।
হঠাৎ আপনার নজর পড়লো ত্রান বিতরণকারীর রেজিস্ট্রি বুকটির দিকে। নজর পড়লো ত্রাণের প্যাকেটের গায়ে কী যেন লেখা রয়েছে। গভীরভাবে দেখতে পেলেন সেখানে লেখা আছে-"বিশ্বমানবতার মুক্তির দূত"/"নবজীবন দানকারী মহৎ"-এর তরফ থেকে এই ত্রাণ সামগ্রী!
আপনি ইমানওয়ালা! লেখাটা দেখেই আপনার অন্তরে বিরাট ধাক্বা এলো! কলিজা মোচড় দিয়ে ওঠলো! হায়হায়! মহাশর্বনাশ!
ইমানের আলোতে খুঁজে পেলেন, এই তো সেই অভিশপ্ত মহাপ্রতারক মসিহে দাজ্জালের ত্রাণ! বুছে ফেললেন, এটা তার মহা প্রতারণা!
এখন আপনি কী করবেন?
-ইমানের বিনিময়ে ত্রাণ নেবেন নাকি খালিহাতে ঘরে ফিরে যাবেন? খালিহাতে ঘরে ফিরে গিয়ে পরিবারকে বুঝাবেন কেমনে? বাচ্চাদের কী বুঝ দেবেন? এতক্ষণে আপনার প্রতিবেশীর ঘর থেকে সুস্বাদু সেই খাবারের ঘ্রাণের মৌ মৌ ঘ্রাণ আপনার ঘরের জানালা দিয়ে ঢুকে পড়ছে!
কী করবেন এই পরিস্থিতে!
ঠিক, এই মুহূর্তে আপনার ইমান টিকানো কত কঠিন হতে পারে কল্পনা করেছেন আদৌ?
কিন্তু আপনি যদি তখন হিম্মত করে ঘরে গিয়ে দরোজা বন্ধ করে সবাইকে একত্রিত করে, তাসবিহ-তাহলিল-তাহমিদ পাঠ করাতে পারেন তবে মহান আল্লাহ, আসমানি খাদ্যর মারফত আপনাদের পেট ভরপূর করে দেবেন। খিধে আর লাগবে না। এমনকি এই ত্রাণের প্রতি ঘৃণা চলে আসবে! আল্লাহু আকবার!
আর দুর্বল ইমানদারদের ইমান ফিকে যাবে ত্রাণের পয়লা স্বাক্ষাতেই! আল্লাহ হিফাজত করুন!
নবি সা. বলেছেন, পৃথিবীবাসীর জন্য তখন দাজ্জালের মুসিবতের চাইতে এত কঠিন মুসিবত অন্য কোনও মুসিবত নেই এবং নেই।
এখন এটা আমাদের উপলব্ধি না-ও হতে পারে! যেহেতু আমরা এখন খাবারের স্তুপে বসবাস করছি!
“আল্লাহুম্মা ইনি আউযুবিকা মিন ফিতনাতিদ দাজ্জালি”! আমিন!
– লিখেছেন মুফতি হুজায়ফি আল -হানাফি
Discussion about this post