এপিজে আব্দুল কালাম তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন একজন বিজ্ঞানী হিসেবে। পরে তিনি ঘটনাচক্রে রাজনীতিবিদে পরিণত হন। কালামের জন্ম অধুনা ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের রামেশ্বরমে। তিনি পদার্থবিদ্যা ও বিমান প্রযুক্তিবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। এরপর চল্লিশ বছর তিনি প্রধানত রক্ষা অনুসন্ধান ও বিকাশ সংগঠন (ডিআরডিও) ও ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থায় (ইসরো) বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞান প্রশাসক হিসেবে কাজ করেন।
ভারতের অসামরিক মহাকাশ কর্মসূচি ও সামরিক সুসংহত নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন কর্মসূচির সঙ্গে তিনি অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত ছিলেন। ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও মহাকাশযানবাহী রকেট উন্নয়নের কাজে তাঁর অবদানের জন্য তাঁকে ‘ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র মানব’ বা ‘মিশাইল ম্যান অফ ইন্ডিয়া’ বলা হয়।
২০১৫ খ্রিস্টাব্দের ২৭ জুলাই মেঘালয়ের শিলং শহরে অবস্থিত ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট নামক প্রতিষ্ঠানে বসবাসযোগ্য পৃথিবী বিষয়ে বক্তব্য রাখার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হন। তাঁকে বেথানী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই ইন্তেকাল করেন গুণী এই ব্যক্তি।
আজ আমরা ইসলাম বার্তার পাঠকদের উদ্দেশে তার এমন ২৫টি উক্তি উল্লেখ করতে যাচ্ছি, যা মনে গেঁথে নিলে পাল্টে যেতে পারে জীবন।
১। ‘স্বপ্ন সেটা নয় যেটা তুমি ঘুমিয়ে দেখো। স্বপ্ন সেটাই, যেটা তোমায় (পূরণের অদম্য ইচ্ছা) ঘুমুতে দেয় না।’
২। ‘“যদি সূর্যের মতো উজ্জ্বল হতে চাও, তাহলে তোমাকেই প্রথমে সূর্যের মত পুড়তে হবে” ।’
৩। ‘যদি তুমি তোমার কাজকে স্যালুট কর, দেখো তোমায় আর কাউকে স্যালুট করতে হবে না। কিন্তু তুমি যদি তোমার কাজকে অসম্মান কর, অমর্যাদা কর, ফাঁকি দাও, তাহলে তোমায় সবাইকে স্যালুট করতে হবে।’
৪। ‘যারা হৃদয় দিয়ে কাজ করতে পারে না, তাদের সাফল্য অর্জন আনন্দহীন ও আকর্ষণহীন, এমন সাফল্যের থেকেই সৃষ্টি হয় তিক্ততা’
৫। “স্বপ্ন বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তোমাকে স্বপ্ন দেখে যেতে হবে”
৬। ‘নানারকমের চিন্তা ও উদ্ভাবনের সাহস থাকতে হবে। আবিষ্কারের নেশা থাকতে হবে। যেই পথে কেউ যায়নি, সেই পথেই এগোতে হবে। অসম্ভবকে সম্ভব করার সাহস থাকতে হবে এবং সমস্যাকে জয় করেই সফল হতে হবে’
৭। ‘প্রথম জয়ের পর কখনই বিশ্রাম নেওয়া উচিত নয়, তাহলে দ্বিতীয়বার যদি আমরা ব্যর্থ হই, তখন সবাই বলবে প্রথমটা তুমি ভাগ্যের জোরে পেয়েছিলে”
৮। ‘আকাশের দিকে তাকাও। আমরা একা নই। পুরো মহাবিশ্ব আমাদের প্রতি বন্ধুত্বসুলভ। যারা স্বপ্ন দেখে এবং কাজ করে, শুধুমাত্র তাদেরকেই
শ্রেষ্ঠটা দেওয়ার জন্য চক্রান্তে লিপ্ত এই বিশ্ব।’
৯। ‘জীবন আর সময় হলো পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শিক্ষক। জীবন শেখায় সময়কে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে আর সময় শেখায় জীবনের মুল্য দিতে।’
১০। “যদি একটি দেশকে দুর্নীতিমুক্ত এবং সুন্দর মনের জাতিতে রুপান্তরিত করতে হয়, তাহলে আমি বিশ্বাস করি এতে তিনজন মানুষের সবচেয়ে বেশি ভূমিকা থাকে – বাবা, মা আর শিক্ষক”
১১। তুমি তোমার ভবিষ্যত পরিবর্তন করতে পারবে না, কিন্তু অভ্যাস পরিবর্তন করতে নিশ্চই পারবে, এবং অভ্যাসই তোমার ভবিষ্যত পরিবর্তন করে দেবে।
১২। “একটা কথা পরিষ্কার, সৃষ্টিকর্তা তাদেরই সহায় থাকেন, যারা কঠোর পরিশ্রম করেন”
১৩। “জীবনে কঠিন সব বাঁধা আসে, তোমায় ধ্বংস করতে নয় বরং তোমার ভেতরের লুকোনো শক্তিকে অনুধাবন করাতে, জাগিয়ে তুলতে। বাঁধাসমূহকে দেখাও না যে তুমিও কম কঠিন নও”
১৪। “যে মানুষগুলো তোমাকে বলে, “তুমি পারো না” বা “তুমি পারবেই না”, তারাই সম্ভবত সেই লোক যারা ভয় পায় এটা ভেবে যে; তুমি পারবে”
১৫। “আমি সুদর্শন নই, কিন্তু আমি আমার হাত ওই মানুষটার জন্য বাড়িয়ে দিতে পারি, যার সত্যি সাহায্যের প্রয়োজন। সৌন্দর্য থাকে মানুষের মনে, চেহারায় নয়”
১৬। “যদি তুমি ব্যর্থ হও অর্থ্যাৎ FAIL করো, তাহলে মোটেই হাল ছেড়ে দিও না। কারণ FAIL শব্দটার একটা ভিন্ন অর্থ আছে- First Attempt in Learning অর্থাৎ শিক্ষার প্রথম ধাপ”
১৭। “সফলতার গল্পে কেবল একটা বার্তা থাকে কিন্তু ব্যর্থতার গল্পে সফল হওয়ার উপায় থাকে”
১৮। “বৃষ্টির সময় প্রত্যেক পাখিই কোথাও না কোথাও আশ্রয় খোঁজে, কিন্তু ঈগল মেঘের উপর দিয়ে উড়ে বৃষ্টিকে এড়িয়ে যায়। চেষ্টা কর, তুমিও পারবে। ”
১৯। “মানুষের জীবনে প্রতিবন্ধকতা থাকা দরকার, বাঁধা না থাকলে সফলতা উপভোগ করা যায় না”
২০। “সহজ ও দ্রুত সুখের জন্য না ছুটে প্রকৃত সফলতার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হও”
২১। “ব্যর্থতা নামক রোগের সবথেকে ভালো অসুধ হলো আত্মবিশ্বাস আর কঠোর পরিশ্রম, এটা আপনাকে একজন সফল মানুষ করে তুলবে”
২২। “নির্দিষ্ট লক্ষ্য, ক্রমাগত জ্ঞান সঞ্চয় করা, কঠোর পরিশ্রম ও হার না মানা মনোভাব – এই চারটি জিনিস মেনে চললে যেকোনো কিছুকেই লাভ করা যেতে পারে”
২৩। “ছোট লক্ষ্য রাখা একটি অপরাধ”
২৪। “ওপরে আকাশের দিকে তাকাও, আমরা একা নই”
২৫। প্রতিদিন সকালে এই পাঁচটা লাইন বলো :
১) আমি সেরা।
২) আমি করতে পারি
৩) সৃষ্টিকর্তা সব সময় আমার সঙ্গে আছে
৪) আমি জয়ী
৫) আজ দিনটা আমার
Discussion about this post